আলমগীর হোসেন, স্টাফ রিপোর্টার, (১৪সেপ্টেম্বর ‘২০): নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার তিস্তাপাড় ও চরাঞ্চলের গরিব শিক্ষার্থীদের জন্য ২০০৩ সালে টেপাখড়িবাড়ী ১নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অব্যবহৃত একটি টিনসেড ভবনের এককক্ষে পাঠাগারটি প্রতিষ্টিত হয় অরুণোদয় পাঠাগার।
বর্তমানে নিজস্ব ঘর না থাকায় প্রায় ১ হাজারেরও অধিক বই পোকায় খাচ্ছে এবং ঢেকে যাচ্ছে ধূলাবালিতে। অথচ একসময় এই পাঠাগার ছিল স্হানীয় গরিব-মেধাবী শিক্ষার্থীদের শিখন মাধ্যম, শিল্প,সাহিত্য ও সংস্কৃতির সূতিকাগার। শুরু থেকে ডিমলা উপজেলার প্রথম সারির শিল্প,সাহিত্য ও সংস্কৃতির কেন্দ্র ছিল পাঠাগারটি।পাঠকদের বই লেনদেন, বইমেলার আয়োজন, সারা বছর বিভিন্ন লোক-সাংস্কৃতিক অনুষ্টানের আয়োজন করা হত, এসকল আয়োজনে বিভাগীয় শিক্ষা কর্মকর্তার উপস্থিতি পর্যন্ত ছিল। দৈনন্দিন সংবাদপত্র পাঠ, গবেষণা, চাকুরি প্রত্যাশীদের জন্য চাকুরির বিজ্ঞাপন ও তথ্য সংগ্রহ করতে সংবাদপত্র গুলোই ছিল ভরসাস্থল।
এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের ও সন্ধ্যাকালীন বয়স্কদের বিনা পারিশ্রমিকে পড়াত স্হানীয় এলাকার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীবৃন্দ পাশাপাশি সাপ্তাহিক মূল্যায়ন পরিক্ষার ব্যবস্থা ছিল। সর্বশেষ তথ্যানুসারে, এই পাঠাগারের ১শতাধিক পাঠক সদস্য, দেড় শতাধিক সাধারণ সদস্য এবং ৫০ জন অাজীবন সদস্য রয়েছে।তবে বর্তমানে বিদ্যালয়ের ঐ টিনসেড ঘরটি পড়াশুনার অনুপযোগী হওয়ায় কেউ সেখানে উকি দেয়না।প্রায় ক’বছর থেকে উল্লেখতি কার্যক্রম স্থগিত হয়ে গেছে। সরেজমিন পরিদর্শন করে দেখা গেছে,যে টিনসেডের ভবনটির কক্ষে দরজা-জানালা নেই।অালমারী সংকটে বইগুলো ধুলাবালিতে ঢেকে যাচ্ছে।টিনের চালা অসংখ্য ছিদ্র বর্ষাকালে বৃষ্টি পড়ে, ইতিমধ্যে শিক্ষা অফিস থেকে টিনসেড ভাবনটি পরিতক্ত্য হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে এবং যে কোন মূহুর্তে এটি ভেঙ্গে ঐ স্হানে বহুতল ভবন নির্মাণ হতে পারে এমটাই জানালেন,বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অাব্দুর রহিম সরকার।
অপরদিকে,করোনা সংকটে শুরু থেকে স্কুল বন্ধের সুযোগ কাজে লাগিয়ে প্রধান শিক্ষকের অনুমতি নিয়ে পাঠাগারের নিয়মিত সদস্যরা পাশেই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাকা বিল্ডিং কক্ষে পড়াশুনা করছে। গ্রন্থাকারিক শাহিন অালম বলেন,’স্কুল বন্ধের শুরু থেকে পাঠকরা বিল্ডিং রুমে নিয়মিত পড়াশুনা করছে , তবে স্কুল খোলার পর নিজস্ব চালা(ঘর) না থাকায় পাঠাগারের অস্তিত্ব নিয়ে আবার হতাশায় পড়তে হবে।’ অরুণোদয় পাঠাগারের সভাপতি আব্দুল বারেক বলেন,’জীবনের অনেক মূল্যবান সময় ও শ্রম এখানে নিঃস্বার্থভাবে ব্যয় করছি,যদি কোন শিক্ষাহৈতশ আমাদের সার্বিক সহযোগিতা করেন তাহলে তিস্তারপাড়ের প্রতন্ত্যঞ্চলে শিক্ষার বাতিঘরটি আমরা পুনরায় অালোকিত করতে পারব।’