সুন্দরগঞ্জে নবনির্বাচিত এমপিকে গণসংবর্ধনা দিলেন পুলিশ হত্যাসহ নাশকতা মামলার আসামী

আবু বক্কর সিদ্দিক, গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি: গাইবান্ধা সুন্দরগঞ্জে ৪ পুলিশ হত্যাসহ একাধিক নাশকতা মামলার আসামী জামাল হোসেনের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় নবনির্বাচিত সরকার দলীয় সংসদ সদস্য গোলাম মোস্তফা আহমেদকে গণসংবর্ধনা দেয়া হয়েছে। উপজেলার সর্বানন্দ ইউনিয়নের কদমতলা এলাকাবাসীর নামে এই গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন হলেও ঐসব মামলার আসামীরা এই গণসংবর্ধনায় সর্বপ্রকার কার্যক্রম পালন করে। এসময় বহুল আলোচিত বামনডাঙ্গা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ৪ পুলিশ হত্যাসহ বিভিন্ন নাশকতা মামলার বেশ কিছু আসামী মঞ্চের সার্বিক দায়িত্ব পালন করেন।
বুধবার সন্ধ্যায় রামভদ্র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে এই গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন সর্বানন্দ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ৬নং ওয়ার্ড সভাপতি আফছার আলী। গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর সন্ধায় গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় এমপি মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন হত্যাকান্ডের পর ২২ মার্চ অনুষ্ঠিত উপ-নির্বাচনে এমপি নির্বাচিত হন একই দলের গোলাম মোস্তফা আহমেদ। নবনির্বাচিত এমপির হাতে জামাল হোসেন আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের ক্রেস্ট তুলে দেন। পোল্ট্রি ব্যবসায়ি এই জামাল হোসেন জামায়াতে ইসলামীর অন্যতম পৃষ্ঠপোষক ও অর্থ যোগানদাতা হিসেবে কয়েকটি নাশকতাসহ ও ৪ পুলিশ হত্যা মামলার আসামি হাজী ফরিদ উদ্দিনের ছেলে। ৪ পুলিশ হত্যা মামলার আসামী আবুল কাশেম বলেন- “আমি কখনই জামায়াত বা ছাত্র শিবিরের সদস্য ছিলাম না। তবে ছাত্রাবস্থায় রংপুর কারমাইকেল কলেজে ছাত্র শিবিরের সমর্থক ছিলাম। নিজ এলাকায় কোন রাজনৈতিক দলের সাথে আমি সম্পৃক্ত নই। ব্যবসায়ি হিসেবে গণসংবর্ধনার আয়োজকরা আমাদের দাওয়াত করায় আমরা সেখানে যাই। আমরা বর্তমানে জামিনে আছি। আমার উপস্থিতি দেখে মাইকে ঘোষণা দেয়ার পর আমি মঞ্চে উঠি”।
এব্যাপারে সর্বানন্দ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি চাঁন মিয়া বলেন, গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানটি আওয়ামী লীগ আয়োজন করেনি। এটি এলাকাবাসির আয়োজনে হয়েছে। যেকারণে তারা কাকে দাওয়াত করেছে তা আমাদের জানা ছিল না। তবে জামাল হোসেন ও আবুল কাশেম ৪ পুলিশ হত্যা মামলার আসামী বলে সবাই জানে।
এব্যাপারে বক্তব্যের জন্য নবনির্বাচিত সাংসদ গোলাম মোস্তফা আহমেদের সাথে একাধিকবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি। গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন উপজেলা আওয়ামীলীগ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা বাবুল, সাংগঠনিক সম্পাদক সাজেদুল ইসলাম, কৃষকলীগ সভাপতি আতাউর রহমান, স্বেচ্ছাসেবকলীগ যুগ্ম আহবায়ক আব্দুল্লাহ্ আল মেহেদী রাসেল প্রমুখ।
উল্লেখ্য, বিগত ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারী জামায়াত নেতা যুদ্ধাপরাধী দেলওয়ার হোসাইন সাঈদীর ফাঁসির রায় ঘোষণার পর জামায়াত-শিবিরের ক্যাডাররা উপজেলায় নারকীয় তা-ব চালায়। এতে বামনডাঙ্গা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে হামলা চালিয়ে ৪ পুলিশকে হত্যা, তদন্ত কেন্দ্রটি আগুনে ভস্মিভূত করে দেয়া ছাড়াও এর পরবর্তীতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন কালীণ সহিংসতা ছাড়াও বামনডাঙ্গা, খানাবাড়ি ও রামভদ্র কদমতলীতে জামায়তা-শিবিরের নাশকতা তা-ব অতীতের যে কোন তা-বকে হার মানিয়েছে বলে সচেতন মহলে মনে করেন।