তিস্তা নিউজ ডেস্ক ঃ অবশেষে ক্ষমা চাইলেন জয়পুরহাটে নারী ফুটবল খেলা বন্ধ করে দেয়া মাওলানারা। গতকাল দুপুরে আক্কেলপুর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে আক্কেলপুর উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত গণশুনানি অনুষ্ঠানে তিলকপুর বিভিন্ন মসজিদের ইমাম, স্থানীয় বাচ্চাহাজী মাদ্রাসার সহকারী পরিচালকসহ মাওলানারা খেলা বন্ধ করে দেয়ার বিষয়ে ক্ষমা চান এবং ভবিষ্যতে আর বাধা দিবেন না বলে অঙ্গীকার করেন। এ সময় মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় কর্তৃক গঠিত তদন্ত টিমের প্রধান উপ-সচিব দেবি চন্দ, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক মনির হোসেন, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরিফুল ইসলাম, আক্কেলপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মঞ্জুরুল আলম উপস্থিত ছিলেন। স্থানীয় ইমাম আ. সামাদ ও আবু বক্কর সবার সামনে ক্ষমা চান। তারা বলেন, গত ২৮শে জানুয়ারি তিলকপুর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে নারী ফুটবল খেলা বন্ধের পক্ষে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ শেষে মাঠ ভাঙচুরের বিষয়ে দুঃখ প্রকাশ করেন। এ সময় তদন্ত টিমের সদস্যরা সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাদা মতবিনিময় করে এলাকার শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখা এবং বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রচারের জন্য অনুরোধ করেন। মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন যমুনা টিভির সিনিয়র রিপোর্টার আব্দুল আলীম, প্রথম আলো প্রতিনিধি রবিউল ইসলাম রুবেল, আক্কেলপুর প্রেস ক্লাবের সভাপতি হামিদুর রহমান শাহিন, প্রেস ক্লাব আক্কেলপুরের সভাপতি শফিউল আলম, সাধারণ সম্পাদক সমকাল প্রতিনিধি মওদুদ আহম্মেদ, সাংবাদিক নিয়াজ মোর্শেদসহ অন্যরা। সাংবাদিকরা তিলকপুরে বন্ধ ফুটবল খেলা পুনরায় চালুর ব্যাপারে পরামর্শ দেন। মতবিনিময় শেষে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন তদন্ত টিমের সদস্যরা। উল্লেখ্য, গত ২৯শে জানুয়ারি জয়পুরহাট ও রংপুর নারী দলের ফুটবল টুর্নামেন্ট আয়োজনের কথা ছিল। এলাকায় সেটি মাইকিং করে প্রচার করা হয়। এতে স্থানীয় আলেম সমাজ ও মুসল্লিরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। তারা ২৮শে জানুয়ারি আসরের নামাজের পর তিলকপুর রেলস্টেশনের সামনে স্বাধীনতা চত্বরে জড়ো হন। সেখানে নারীদের খেলা নিয়ে আপত্তি তুলে কয়েকজন বক্তব্য দেন। এরপর তারা সেখান থেকে গিয়ে খেলার মাঠের টিনের বেড়া ভাঙচুর করেন। তাদের বক্তব্য ও ভাঙচুরের বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে লাইভ করা হয়। পরবর্তীতে বিভিন্ন গণমাধ্যমে এ নিয়ে সংবাদ প্রচার করা হলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে তদন্ত টিম গঠন করা হয়।
সূত্র ঃ দৈনিক মানবজমিন।