তিস্তা নিউজ ডেস্ক ঃ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগের ফ্যাসিবাদী শাসনব্যবস্থা বিদায় করতে সাড়ে ১৫ বছর আন্দোলন-সংগ্রাম করেছি। কিন্তু রাজনৈতিকভাবে আন্দোলন করে ফ্যাসিস্ট সরকারকে বিদায় করতে পারিনি আমরা। তবে জুলাইয়ের আন্দোলনটা কোনও রাজনৈতিক দলের ছিল না। এটি ছিল ছাত্র-জনতার অধিকারের আন্দোলন। এর বিরুদ্ধে হাতুড়ি বাহিনী নামিয়েছিল সরকার। ফলে গণঅভ্যুত্থানে রূপ নেয়। তার মধ্য দিয়ে ফ্যাসিবাদী শাসন বিদায় নেয়। কাজেই এটি ছাত্র-জনতার আন্দোলনের ফসল। আর নেতৃত্বের সফলতার দাবিদার আমাদের ছাত্র ও যুবসমাজ।’
মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) বিকালে বরিশাল নগরের হেমায়েত উদ্দিন ঈদগাহ মাঠে মহানগর ও জেলা জামায়াতের কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
জামায়াতের আমির বলেন, ‘একটা গোষ্ঠী বাংলাদেশকে সাড়ে ২৩ বছর শাসন করেছিল। কিন্তু তারা বাংলাদেশকে এক থাকতে দেয়নি। জনগণকে কয়েক ভাগে বিভক্ত করে টুকরো টুকরো করেছে। জুলাইয়ে আমরা আমাদের সন্তানদের সঙ্গে কণ্ঠ মিলিয়ে রাস্তায় নেমেছি ফ্যাসিবাদকে বিদায় করতে। আবু সাঈদের মৃত্যু এই আন্দোলনকে বেগবান করেছে। শুধু বাংলাদেশ নয়, সারা বিশ্ব আবু সাঈদকে মুক্তির মহানায়ক বলছে। তার পরিবারের কাছে গিয়ে আমরা ধন্য হয়েছি। এমন সন্তান জন্ম দিয়ে তার বাবা-মাও সৌভাগ্যবান।’
আন্দোলনে হাজারো পরিবারের সন্তান শহীদ হয়েছে উল্লেখ করে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘একজনের রাক্ষসী মনোভাবের কারণে এত মানুষ শহীদ হয়েছে। তিনি গণহত্যাকারী এবং তার দলও। আমরা গণহত্যাকারী প্রতিটি ব্যক্তির বিচার চাই। আওয়ামী লীগ প্রমাণ করেছে তারা রাজনৈতিক দল নয়, গণহত্যাকারী সিন্ডিকেট। সবচেয়ে বেশি কষ্ট দিয়েছে জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীদের। একে একে দলের নেতৃবৃন্দকে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে। নেতাকর্মীদের বছরের পর বছর কারাগারে বন্দি রাখা হয়েছে।’
জামায়াতের আমির আরও বলেন, ‘সভা-সমাবেশে আমাকে প্রশ্ন করা হয়, আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ অংশগ্রহণ করতে পারবে কিনা। আমরা মনে করি, আগে গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগের বিচার হওয়া উচিত। বিচার হওয়ার পর গণহত্যার শিকার পরিবারগুলো সিদ্ধান্ত দেবে তারা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে কিনা।’
মহানগর জামায়াতে ইসলামীর আমির অধ্যক্ষ জহির উদ্দিন মুহাম্মদ বাবরের সভাপতিত্বে সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, মাওলানা আব্দুল হালিম, মুয়াযযম হোসাইন হেলাল ও কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য অধ্যাপক মোহাম্মদ আব্দুল জব্বার।