সন্ধ্যা ৭ টার দিকে বিমান বাহিনীর গ্রুপ ক্যাপ্টেন মাহেরীন চৌধুরীর সমাধিস্থলে উপস্থিত হন। তিনি মাহেরীন চৌধুরীর মৃত্যুতে বাহিনীর পক্ষ থেকে গভীর শোক প্রকাশ করেন এবং তার পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানান। তিনি তার বক্তব্যে বলেন,মাহেরীন চৌধুরী বিএএফ শাহীন কলেজ ঢাকার সাবেক শিক্ষার্থী এবং তাঁর শ্বশুর বিমানবাহিনীর গর্বিত সদস্য। শিক্ষিকা মাহেরীনের এই আত্মত্যাগ সমাজে এক অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে, তাঁর প্রতি সম্মান জানাতেই এই শ্রদ্ধা নিবেদন করা । "একজন শিক্ষিকার এমন আত্মত্যাগ সমাজের জন্য অনুকরণীয়। আমরা তার রুহের মাগফিরাত কামনা করি।" এই আবেগঘন পরিবেশে উপস্থিত ছিলেন জলঢাকা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আরজু মো. সাজ্জাদ হোসেনসহ উপজেলা প্রশাসন ও থানা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। মাহেরীন চৌধুরীর পরিবারের সদস্যরাও এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন, এবং তাদের উপস্থিতিতে পুরো পরিবেশটি আরও বেশি আবেগঘন হয়ে ওঠে।
গত ২১ জুলাই (সোমবার) দুপুরে উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে ক্লাস চলাকালীন পাশের একটি ভবনে বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান আছড়ে পড়ে। মুহূর্তেই ভবনটিতে আগুন ধরে যায়। ধোঁয়া আর আতঙ্কে চারপাশ যখন হাহাকার, তখনও শিক্ষিকা মাহেরীন চৌধুরী তার শিশু শিক্ষার্থীদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে ব্যস্ত ছিলেন। শিক্ষার্থীদের রক্ষায় তার এই সাহসী পদক্ষেপ ছিল এক অসাধারণ আত্মত্যাগের দৃষ্টান্ত। একপর্যায়ে তিনি নিজেই আগুনে আটকে পড়েন এবং তার শরীরের অধিকাংশ দগ্ধ হয়। গুরুতর অবস্থায় তাকে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নেওয়া হয়। দীর্ঘক্ষণ লাইফ সাপোর্টে থাকার পর রাত ১০টা ১০ মিনিটে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। এই ঘটনা পুরো জাতিকে শোকাহত করেছে এবং তার এই আত্মত্যাগ মানুষের মনে গভীর রেখাপাত করেছে।